যাদুকাটাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন
- আপলোড সময় : ১০-১০-২০২৫ ০৯:২৯:০৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১০-১০-২০২৫ ০৯:২৯:০৪ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
তাহিরপুরের সীমান্ত নদী যাদুকাটা নদীর বালুমহাল বিলুপ্ত করে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছে যাদুকাটা নদী রক্ষা আন্দোলন। বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে মানবন্ধন করে এ দাবি জানানো হয়। যাদুকাটা নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের লোকজন এবং সিলেটের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে জানানো হয়, প্রায় ২০ বছর যাবত যাদুকাটা নদীর পাড় কাটার ফলে নদীর আয়তন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। আগে এ নদী ছিল মাত্র ৫৭ ফুট প্রশস্ত। পাড় কাটার কারণে এখন কিছু জায়গায় নদীটি এক কিলোমিটারের চেয়েও বড় হয়ে গেছে। আশেপাশের অনেক ফসলি জমি ও বাড়ি ঘর নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। তাই পাড় কাটা বন্ধের জন্য এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এ নদীতে দুটি বালুমহাল রয়েছে যা যাদুকাটা-১ এবং যাদুকাটা-২ বালুমহাল নামে পরিচিত। যাদুকাটা-১ বালুমহালটি তাহিরপুর উপজেলার চালিয়ারঘাট মৌজায় এবং যাদুকাটা-২ বালুমহালটি বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর মৌজার চালিয়ারঘাট, লাউর এবং ইকরাটিয়া মৌজায় অবস্থিত।
বালুমহাল দুটি ইজারা প্রদানে যান্ত্রিক উপায়ে বালু উত্তোলনে পর্যটনকেন্দ্র শিমুল বাগান, বারেক টিলা, শাহ আরেফিন সেতু, বিজিবি ক্যা¤প, লাউড়েরগড় বাজার, বিন্নাকুলী বাজার, ইসকন মন্দির, অদ্বৈত আখড়া, ঘাগটিয়া, সাহিদাবাদ, লাউড়েরগড়, গড়কাটি, মোদেরগাঁও, পাঠানপাড়া, মানিগাঁও, কুনাটছড়া, সোহালা, মিয়ারচর ও সত্রিশ গ্রামের অসংখ্য ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। এ বছর নদী ইজারা না দেওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় বেশ কিছুদিন ইজারা কার্যক্রম স্থগিত ছিল। সর্বশেষ নদীর পাড় না কাটা ও ড্রেজার মেশিন, বোমা মেশিন ব্যবহার না করার শর্তে বালুমহাল দুটি ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ইজারা শর্ত লঙ্ঘন করে এখন যাদুকাটা নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
যাদুকাটা নদী রক্ষা আন্দোলনের আয়োজনে এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় আয়োজিত এ মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন যাদুকাটা পাড়ের বাসিন্দা কলামিস্ট গোলাম সারওয়ার।
মানববন্ধন আয়োজক কমিটির সদস্য এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, যাদুকাটা নদীর পরিবেশ রক্ষা করতে হলে এই নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য সনাতন পদ্ধতিতে পরিবেশ সম্মত উপায়ে কমিউনিটি ভিত্তিক বালু পাথর আহরণের সুযোগ করে দিতে হবে।
দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সুনামগঞ্জ সমিতি সিলেটের সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, সুনামগঞ্জ সমিতি সিলেটের সাধারণ স¤পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট জেলার কোষাধ্যক্ষ জাফর সাদেক শাকিল, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ স¤পাদক পিযুষ পুরকায়স্থ টিটু, ঘাগটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
যাদুকাটা তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের কথা তুলে ধরে বলা হয়, যাদুকাটা নদীর পাড় কাটার ফলে আমাদের ২০টি গ্রামের বাড়িঘর হুমকির মুখে। ইতোমধ্যে অনেক বাড়িঘর, ফসলি জমি, রাস্তা ঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের ভিটামাটি রক্ষা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। গ্রাম বাঁচাতে আমরা ইজারা প্রথা বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। - খবরের কাগজ
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ